জসীম উদ্দিনঃ সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব-১০ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী বেশ কিছুদিন যাবত অবৈধভাবে পিস্তলসহ বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন নাশকতাকারীদের নিকট অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে।র্যাব-১০ উক্ত অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১১ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২২:৫০ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রটির মূলহোতা অস্ত্র তৈরিকারী মোঃ মোখলেছুর রহমান সাগর (৪২) ও তার অস্ত্র তৈরির প্রধান সহযোগী মোঃ তানভির আহম্মেদ (৩২)পিরোজপুর’দের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত মোখলেছুর ও তানভিরের দেওয়া তথ্যমতে র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল ১২ মার্চ ২০২৪ ইং আনুমানিক ভোররাত ২ঃ৫০ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার বাড্ডা থানাধীন হাজী আব্দুল হামিদ রোডস্থ পূর্ব-পদরদিয়া এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত অবৈধ অস্ত্র তৈরি ও ব্যবসায়ী চক্রের অপর ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে।
দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান গ্রেফতারকৃত মোঃ মোখলেছুর রহমান সাগর উক্ত অবৈধ অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রটির মূলহোতা। সে পেশায় একজন ভাস্কর্য/মূর্তি তৈরির কারিগর। উক্ত ভাস্কর্য/মূর্তি তৈরির দক্ষতার সুবাদে মোখলেছুর রহমান সাগর ভারতের কলকাতায় এবং আসামের শিলিগুঁড়িতে প্রায় ১২ বছর যাবৎ সেখানে ভাস্কর্য/মূর্তি তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছিল।
পরবর্তীতে সেখানে সুকুমার নামক একজন অস্ত্র তৈরির কারিগরের সাথে তার পরিচয় হয় এবং ঐ ব্যক্তির কাছ থেকে মোখলেছুর রহমান সাগর অস্ত্র তৈরির দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর মোখলেছুর রহমান সাগর দেশে এসে অস্ত্র তৈরি করে স্বল্পদিনে কোটিপতি হওয়ার আশায় উক্ত অবৈধ অস্ত্র তৈরি করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সরবরাহের পরিকল্পনা করে।
উক্ত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তানভির সাগরের দেয়া নকশা অনুযায়ী বিভিন্ন অস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির মাধ্যমে সাগরের অস্ত্র তৈরির প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সাগর ও তানভির অস্ত্র তৈরি করে সেগুলো অনিক ও সৈকতের নিকট হস্তান্তর করতো।
পরবর্তীতে অনিক ও সৈকত উক্ত অস্ত্র বিভিন্ন ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করতো। এক্ষেত্রে প্রত্রিটি পিস্তল/অস্ত্র ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতো। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় তারা সবাই স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে এই ব্যবসার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে।
তিনি আরো জানান আমির ও রাজু তাদের অন্যতম অস্ত্রের ক্রেতা।আমির ও রাজু উক্ত অস্ত্র ক্রয় করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন নাশকতাকারীদের নিকট অধিক মূল্যে বিক্রি করতো বলে জানা যায়। তারা উভয়ই অস্ত্র ক্রয়ের উদ্দেশ্যে অনিক ও সৈকতের নিকট আসে এবং অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় করাকালীন হাতেনাতে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।