নিজস্ব প্রতিবেদক:- দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বড় দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও কূটনৈতিক তৎপরতায় সরগরম রাজনীতির মাঠ। এমন পরিস্থিতিতে বসে নেই ছোট দলগুলোও। আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা ছক কষছেন তারা। মাঠে কোনো কর্মসূচি বা কর্মী সমর্থক না থাকলেও সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছেন একাধিক দলের নেতারা।
এবার প্রার্থী যাচাই-বাছাই এর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হাতে অতীতের প্রতিটা প্রার্থী নেতার হালখাতা রয়েছে ।
সমগ্র বাংলাদেশের মধ্য ফেনী-১ নির্বাচনী আসনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ সংসদীয় আসন। ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০১ ও সর্বশেষ ২০০৮ সালসহ সর্বমোট চারবার আসনটি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
এ আসনের ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে তার পৈত্রিক বাড়ি হওয়ায় আসনটি খালেদার আসন হিসেবে খ্যাত। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে এ আসনে নিশ্চিতভাবেই এমপি পদে প্রার্থী হবেন খালেদা জিয়া- এমনটাই মনে করছেন নেতা-কর্মীরা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই উক্ত আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাই সাইদ ইস্কান্দারের মৃত্যুর পরে এ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যায়।
বিএনপির নিজস্ব অন্ত কোন্দলে ও নেতৃত্বের অভাবে বিএনপির দুর্গ বলে খ্যাত এই আসনটি এখন প্রায় আওয়ামী লীগের দখলে বললে চলে।
২০১৮ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়,প্রাথমিকভাবে রফিকুল আলম মজনুকে ফেনী-১ আসনের দায়িত্ব দেওয়ার পর কিছুটা ঠিক অবস্থানে আসলেও বর্তমানে অন্ত কোন্দলের কারনে ফেনীতে বিএনপি যোগ্য নেতৃত্বের কারনে নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়েছে ফেনী নির্বাচনী এলাকা ।
বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১ আসন থেকে নির্বাচন করার ১০০% সম্ভাবনা থাকলে ও
বর্তমানে রফিকুল আলম মজনু জেলবন্দি অবস্থায় আছেন দীর্ঘদিন।
আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে ফেনীতে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে ফেনী-১ আসনের বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী আছে বলে ও তার গুঞ্জন রয়েছে।বেগম খালেদা জিয়া’কে যদি মামলার বেড়াজালে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয় গতবারের মতো এবারও দল থেকে রফিকুল আলম মজনু কে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
রাজনৈতিক বেড়াজালে রফিকুল আলম মজনুকে যদি সরকার নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয় সে ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে, সেটা নির্ভর করবে বেগম খালেদা জিয়ার মতামতের উপর, বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান তার পরিবার থেকে কাউকে মনোনয়ন দিলে সে ক্ষেত্রে কোন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে স্পষ্ট জানা গিয়েছে।
রফিকুল আলম মজনু বা বেগম খালেদা জিয়া পরিবার থেকে যদি কোন প্রার্থী পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে তরুন শিল্পপতি বর্তমান বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথের জুলুমে নির্যাতিত ত্যাগী নেতা আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফেনী জেলা বিএনপির সা: সদস্য উচ্চশিক্ষিত মার্জিত ও পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে ওয়াহিদ উল্ল্যা মজুমদার (মানিক) এর নাম স্থানীয় ভাবে গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।
এছাড়াও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেব, ছাগল নাইয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুর আহমেদ মজুমদারের নাম শুনা যাচ্ছে।সরকার যদি বিএনপির দাবী মেনে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন, সেই ক্ষেত্রে দলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দিকনির্দেশনা থাকে সে ক্ষেত্রে তারা প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।
প্রশ্ন হলো, জনগণের দফা কী ? দেশের প্রধান দুই দলের এখন এক দফা কী হওয়া উচিত? এক দফা হওয়া উচিত এরকম: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে দুর্নীতিতে লাগাম দিয়ে নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। যেখানে শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন মুখ্য নয়, বরং কম খেয়ে পরে হলেও যে ব্যবস্থাটি কল্যাণকর, মানবিক, সহনশীল এবং যে রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানুষ নির্ভয়ে ক্ষমতাবানদের সমালোচনা করতে পারে। কিন্তু এই এক দফা বাস্তবায়নে কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনোদিন একমত হবে?
পরিশেষে, রাজনীতির মাঠ ও মঞ্চে প্রধান দুই দল যে কথাই বলুক এবং নিজেদের এক দফায় যতই অনড় আছে বলে মনে হোক না কেন, ভেতরে ভেতরে তাদের মধ্যে কি কোনো আপসফা হতে পারে? সেক্ষেত্রে দুই দলেরই ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা দিন শেষে ব্যক্তির চেয়ে দল এবং দলের চেয়ে যে দেশ ও জনগণ বড়—সেই উপলব্ধিটা জরুরি। রাজনীতিবিদদের কাছে যদি দেশ ও জনগণের চেয়ে দল কিংবা ব্যক্তি বড় হয়ে ওঠে, তাহলে তার খেসারত দিতে হয় দেশ এবং দেশের সাধারণ মানুষকে। বাংলাদেশকে এরকম খেসারত আর দিতে না হয়, সেটিই প্রত্যাশা।
এই বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে একাদিক বার যোগাযোগ করে ও কোনো সাড়া মেলেনি।