
রাজধানীর গুলশান বনানী ডিপ্লোমেটিক জোন কুটনীতিক পাড়া, গুলশান, বনানী, হেয়ার কাটিং সেলুন, বিউটি পার্লার, স্পা সেন্টার গুলো নামে-বেনামে তরুণ-তরুণী দিয়ে চালাচ্ছে জমজমাট মাদক ব্যবসা ব্ল্যাকমেইলের রমরমা বাণিজ্য।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে ‘ক্ষুদ্র ব্যবসার’ লাইসেন্স নিয়ে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতে স্পা’র নামে চলছে মাদক ও দেহব্যবসা। তরুণীদের দিয়ে গ্রাহকদের স্পা করানোর হয়। ওই সময়ের ছবি ধারণ করে পরবর্তীতে চলে ব্ল্যাকমেইল।
সম্প্রতি গুলশান ও বনানী এলাকায় এ ধরনের চার’টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জন’কে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগ। তাদের আটকের পর ঢাকার অভিজাত এ এলাকার অন্ধকার ব্যবসার খবর জানা যায়।
নাম প্রকাচ্ছে অনুচ্ছুক এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে গুলশান-বনানী এলাকা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ডিবির অনুসন্ধানে উঠে আসে, সিটি কর্পোরেশন থেকে নামে -বেনামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে কতিপয় প্রতারক চক্রের সদস্য।
প্রতিষ্ঠানগুলো কী ব্যবসা করবে কিংবা লাইসেন্স নেয়ার পর কী ধরনের ব্যবসা করছে,তা যাচাই-বাছাই করছে না সিটি কর্পোরেশন। এ সুযোগে স্পা, ফিটনেস ও থেরাপি সেন্টার খুলে এর আড়ালে চালানো হয় রমরমা মাদক ও দেহব্যবসা।
গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের পর এবছরের শুরুর দিকে গুলশান বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়।
‘পতিতাবৃত্তি’ ও ‘দাসত্বে’ বাধ্য করায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২ এর আওতায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সম্প্রতি গুলশান ও বনানী এলাকার ২৫,জনকে আটক করে ডিবি।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি জানতে পারে, গুলশান ও বনানী এলাকায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক স্পা ও থেরাপি সেন্টার রয়েছে।তার মধ্য বেশীর ভাগ গুলশান এলাকায়।স্পা আড়ালে চলে মাদক ও দেহ ব্যবসা। স্থানীয় থানা পুলিশ ও প্রভাবশালী কয়েকজনের মদদে চলছে এসব প্রতিষ্ঠান।
গুলশানের একটি স্পা সেলুনে সার্ভিস নিতে গিয়ে ব্ল্যাকমেইলের শিকার এক ব্যবসায়ী (ছদ্মনাম) বলেন, ‘শরীর ম্যাসেজ করানোর সময় আমাকে না জানিয়ে আপত্তিকর ছবি ধারণ করা হয়। এর কয়েক দিন পর আমাকে ফোনে ব্ল্যাকমেইল করা হয়।তিন লাখ টাকা না দিলে ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরে আমি টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করি এবং পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগও করি।
ডিবির তদন্তে জানা গেছে, গুলশান এলাকার বেশ কিছু স্পা সেন্টার তাদের ব্যবসার আড়ালে দেহ ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে।বডি ম্যাসাজের নামে দেহব্যবসা ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন অনেক স্পা সেন্টার।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিজাত এলাকায় স্পা ও থেরাপি সেন্টারের নামে প্রতিষ্ঠান খুলে নানা অপরাধ ও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। একটি সভ্য সমাজে ব্যবসার আড়ালে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলতে পারে না।’
গুলশানে অবৈধ এসব ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমরা খুবই কঠোর। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সবসময় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করি।এছাড়া এসবের দ্বারা কেউ যাতে ব্ল্যাকমেইল বা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।