ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জরুরি নির্দেশনা! হাটহাজারী দক্ষিণ মাদার্শা এলাকায় জবরদখল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ের কেয়ারটেকার গোলাম মোস্তফার উপর হামলা দাসের জঙ্গল বাজার বণিক সমিতি নির্বাচনে সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুজন হাওলাদার নদী ভাঙ্গনে দিশেহারা অসহায় দক্ষিণ সাদিশের মানুষ বাকলিয়ায় ১৫ যুবদলের কর্মীকে যুবলীগ সাজিয়ে হত্যা মামলা ভূয়া র‍্যাব সদস্য পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনার মূলহোতা রাকিব সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ মানবিক রক্ত ব্যাংকের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত! গাজীপুর প্রেসক্লাবের ২০২৪-২৫ নির্বাচন অনুষ্ঠিত মাসুদুল সভাপতি, নজরুল সাধারণ সম্পাদক

ডাকাতির নাটক সাজিয়ে বাবা’কে হত্যা’পিবিআই কর্তৃক ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন!

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ০৮:৫২:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ২২৭৮ বার পড়া হয়েছে

মাসুদ রানা,সিনিয়র রিপোর্টারঃ পুলিশের একটি আধুনিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে প্রতিনিয়ত কাজ করে সংস্থাটি ।সাম্প্রতিক সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের (৭২) দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েকে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার কথা শুনেই বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে একমাত্র ছেলে এইচএম মাসুদ (৪২)। এজন্য পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে এক অটো ড্রাইভার মো. রুবেলকে (২৭) যুক্ত করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে বাবাকে হত্যাও করেন। তবে সেই হত্যাকাণ্ডকে ডাকাতির নাটক সাজান ছেলে মাসুদ।

অদ্য রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে রুবেলকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা তোলেন তিনি। সেই টাকা থেকে দুই মেয়েকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছেলেকে জানান হালিম। এছাড়া হালিম তার সম্পত্তির ভাগও দিতে চান দুই মেয়েকে। এতেই মুক্তিযোদ্ধা বাবা আ: হালিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাসুদ। এই পরিকল্পনায় যুক্ত করেন পরিবারের পূর্বপরিচিত অটো ড্রাইভার মো. রোবেলকে (২৭)।
‘রুবেল মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের পরিবারের পূর্বপরিচিত। তিনি পরিবারটির বিভিন্ন কাজকর্ম করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। ঘটনার দিন মাসুদ রুবেলকে ফোন দিয়ে দ্রুত তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। রাতে ফোন পেয়ে রুবেল বাসায় প্রবেশ করে। বাসার ২য় তলায় যেখানে মাসুদ এবং তার বাবা বসবাস করে সেখানে গিয়ে পূর্ব থেকেই অবস্থান নেয়। রাতে মাসুদের বাবা আ: হালিম (৭২) ঘুমিয়ে পড়লে তারা উভয়ই তার রুমে প্রবেশ করে।’

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার আরও বলেন, তারা প্রথমে বিছানার মশারি খুলে, ছেলে মাসুদ তার বাবার হাত পা চেপে ধরে এবং রুবেল তার দুই হাত দিয়ে আ: হালিমের গলা চেপে ধরে। এতে হালিম চিৎকার দিলে রুবেল বালিশ দিয়ে তার মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মারা যাওয়ার পর তার ছেলে মাসুদ তার ঘরে থাকা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্র দিয়ে ব্লাড প্রেসার মেপে মৃত্যু হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হন। পরে আলমারি থেকে ৫ লাখ টাকা এবং তাদের বাসার সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স বাইরে ফেলে দেওয়ার জন্য রুবেলকে দেন তিনি।

‘তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ডাকাতির নাটক সাজাতে আসামি রুবেল নিহতের ছেলে মাসুদাকে পাটের রশি দিয়ে হাত-পা এবং গামছা দিয়ে মুখ বেধে ফ্লোরে ফেলে রাখে। আর বাসা থেকে টাকা এবং সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই ঘটনার পর আশপাশের মানুষকে ডাকাতরা তাকে বেঁধে তার বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানায় মাসুদ। পরদিন রুবেলকে পলাতক থাকার কথাও বলে মাসুদ।

তিনি বলেন, ঘটনার পর পলাতক থাকেন মো. রুবেল। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর গতকাল শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি মাসুদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।আসামী মাসুদ দেশের বাহিরে থাকলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে আনার জন্য ও চেষ্টা চালাবেন বলে জানান তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১

ডাকাতির নাটক সাজিয়ে বাবা’কে হত্যা’পিবিআই কর্তৃক ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন!

আপডেট সময় : ০৮:৫২:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মাসুদ রানা,সিনিয়র রিপোর্টারঃ পুলিশের একটি আধুনিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে প্রতিনিয়ত কাজ করে সংস্থাটি ।সাম্প্রতিক সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের (৭২) দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েকে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার কথা শুনেই বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে একমাত্র ছেলে এইচএম মাসুদ (৪২)। এজন্য পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে এক অটো ড্রাইভার মো. রুবেলকে (২৭) যুক্ত করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে বাবাকে হত্যাও করেন। তবে সেই হত্যাকাণ্ডকে ডাকাতির নাটক সাজান ছেলে মাসুদ।

অদ্য রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে রুবেলকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা তোলেন তিনি। সেই টাকা থেকে দুই মেয়েকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছেলেকে জানান হালিম। এছাড়া হালিম তার সম্পত্তির ভাগও দিতে চান দুই মেয়েকে। এতেই মুক্তিযোদ্ধা বাবা আ: হালিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাসুদ। এই পরিকল্পনায় যুক্ত করেন পরিবারের পূর্বপরিচিত অটো ড্রাইভার মো. রোবেলকে (২৭)।
‘রুবেল মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের পরিবারের পূর্বপরিচিত। তিনি পরিবারটির বিভিন্ন কাজকর্ম করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। ঘটনার দিন মাসুদ রুবেলকে ফোন দিয়ে দ্রুত তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। রাতে ফোন পেয়ে রুবেল বাসায় প্রবেশ করে। বাসার ২য় তলায় যেখানে মাসুদ এবং তার বাবা বসবাস করে সেখানে গিয়ে পূর্ব থেকেই অবস্থান নেয়। রাতে মাসুদের বাবা আ: হালিম (৭২) ঘুমিয়ে পড়লে তারা উভয়ই তার রুমে প্রবেশ করে।’

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার আরও বলেন, তারা প্রথমে বিছানার মশারি খুলে, ছেলে মাসুদ তার বাবার হাত পা চেপে ধরে এবং রুবেল তার দুই হাত দিয়ে আ: হালিমের গলা চেপে ধরে। এতে হালিম চিৎকার দিলে রুবেল বালিশ দিয়ে তার মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মারা যাওয়ার পর তার ছেলে মাসুদ তার ঘরে থাকা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্র দিয়ে ব্লাড প্রেসার মেপে মৃত্যু হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হন। পরে আলমারি থেকে ৫ লাখ টাকা এবং তাদের বাসার সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স বাইরে ফেলে দেওয়ার জন্য রুবেলকে দেন তিনি।

‘তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ডাকাতির নাটক সাজাতে আসামি রুবেল নিহতের ছেলে মাসুদাকে পাটের রশি দিয়ে হাত-পা এবং গামছা দিয়ে মুখ বেধে ফ্লোরে ফেলে রাখে। আর বাসা থেকে টাকা এবং সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই ঘটনার পর আশপাশের মানুষকে ডাকাতরা তাকে বেঁধে তার বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানায় মাসুদ। পরদিন রুবেলকে পলাতক থাকার কথাও বলে মাসুদ।

তিনি বলেন, ঘটনার পর পলাতক থাকেন মো. রুবেল। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর গতকাল শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি মাসুদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।আসামী মাসুদ দেশের বাহিরে থাকলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে আনার জন্য ও চেষ্টা চালাবেন বলে জানান তিনি।