গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ইং ভিকটিম আমির হোসেন(২৫)জেলা-নোয়াখালী হতে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করার কথা বলে ঢাকায় আসে এবং ২২ ডিসেম্বর ২০২২ দক্ষিনখান থানাধীন আশকোনা মেডিকেল রোড ভিকটিমের বোন নুরনাহার বেগম (৩৪) এর বাসায় আসে।
পরবর্তীতে ২৮ ডিসেম্বর ভিকটিমের মোবাইল হতে ভিকটিমের অপর বোন কামরুন্নাহার (২২) এর মোবাইলে ফোন করে অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা ভিকটিমের মুক্তিপণ বাবদ ১০,০০,০০০/-(দশ লক্ষ) টাকা চাদাঁ দাবি করে। এ বিষয়ে ভিকটিমের ভাই বিল্লাল (৪০) দক্ষিণখান থানায় উপস্থিত হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি প্রাপ্তির পর থেকে দক্ষিণখান থানার বিশেষ টিম ভিকটিম উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে গত ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ভিকটিমের ভাই বিল্লাল থানায় উপস্থিত হয়ে অজ্ঞাতনামা বিবাদীদের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দাখিল করেন। বাদীর এজাহার গ্রহণ পূর্বক দক্ষিণখান থানার অপহরণ মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণখান জোন) এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার(দক্ষিণখান জোন) নির্দেশনা মোতাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। ঘটনায় জড়িত আসামীরা দুর্ধর্ষ ও চতুর হওয়ায় তাদেরকে চিহ্নিত করতে বেশ কয়েকবার কৌশল পরিবর্তন করা হয়।
পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামী সনাক্ত করে অভিযানে সন্ধিগ্ধ আসামী আশরাফুল ইসলামকে ঢাকা জেলার সাভার জিরাবো এলাকা হতে গ্রেফতার হয়। উক্ত আসামীর দেওয়া তথ্য মোতাবেক আরো দুইজন আসামী রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান থানা কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৫(পাঁচ) জন আসামী গ্রেফতার করেছে। গত ১৭ মে ২০২৩ নোয়াখালীর দুর্গম হাতিয়া দ্বীপে অভিযান পরিচালনা গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃতদের নাম-মোঃ তারেক তারেক আহাম্মেদ (৩১) মোহাম্মদ হৃদয় আলী (২৯)আশরফুল ইসলাম (২৩) রাসেল সরদার (২৫)তৌহিদুল ইসলাম বাবু (৩০)।
এরই প্রেক্ষিতে উপরোক্ত তিনজন আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্দিগ্ধ মূলহোতা মোঃ তারেক তারেক আহাম্মেদ ও সহযোগী মোহাম্মদ হৃদয় আলীকে চিহ্নিত করা হয় এবং আসামী গ্রেফতারে জন্য সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে । ১৭ মে ২০২৩ দক্ষিনখান থানার বিশেষ টিম নোয়াখালীর দুর্গম হাতিয়া দ্বীপে অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা আসামী এবং তার সহযোগী আসামীকে গ্রেফতার করে।
মূল আসামী দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৭ মে ২০২৩ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন এলাকার একটি বাড়ীর পরিত্যক্ত সেফটি ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে ভিকটিমের হাত-পা রশি দিয়ে বাধাঁ হয়। লাশের সুরতহাল প্রস্তুত পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জানান,আসামী তারেকের “কষ্টের জীবন” নামের একটি ফেসবুক আইডি ছিলো। সে বিভিন্ন সময় ফেসবুক মেসেঞ্জার বিভিন্ন ব্যাক্তিদের সমকামিতার প্রস্তাব দিতো।যারা তার প্রস্তাবে সাড়া দিতো তাদেরকে গাজীপুর/চৌরাস্তা/শ্রীপুর/মাওনায় ডেকে নিয়ে কৌশলে মোবাইল টাকা পয়সা নিয়ে ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দিতে। অত্র মামলায় ভিকটিম আমিরকেও মেসেঞ্জারে নক করে গাজীপুর চৌরাস্তায় যাওয়ার জন্য বলে।ধৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।