নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং বিকাল অনুমান ৫ ঘটিকার সময় দীপ্ত সাহা (২২)নিজ বাড়ি হতে পার্শ্ববর্তী হোগলাডাঙ্গা পূর্বপাড়া আড়ংখোলায় অনুষ্ঠান দেখার কথা বলে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল সহ বের হয়ে যায়। পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং ১১.৩০ ঘটিকার সময় নড়াইল সদর থানাধীন হোগলাডাঙ্গা গরানের মাঠ হাজরাতলা মহাশ্মশ্বানের উত্তর পার্শ্বে জনৈক উত্তম বিশ্বাস এর লীজকৃত মাছের ঘেরে পানির মধ্য হতে দীপ্ত সাহা (২২) এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ পিবিআই, যশোর জেলার একটা নিখোঁজ করা হয় জিডি নং-২৫৫।
জিডি মূলে ঘটনাস্থল পরিদর্শণসহ ছায়া তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার অ্যাডিশনাল আইজি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন এর সুদক্ষ নেতৃত্ত্বে পিবিআই, যশোর ক্রাইমসিন টিম ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ শামীম মুসা, সঙ্গীয় এসআই(নিঃ) রেজোয়ান ও এসআই(নিঃ) গোলাম আলীসহ যশোর জেলার চৌকস দল ছায়া তদন্তকালীন সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার মুলপরিকল্পনাকারী সুমন সরকার (৩০), সজীব কুমার বিশ্বাস (২২)আকাশ রায় (২১)’কে নড়াইলগণ হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত মর্মে সন্দেহ হলে তাদেরকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ ইং ফৌঃ কাঃ বিঃ ৫৪ ধারা মোতাবেক আসামীদের নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়াও আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বদির (৩২)’কে নড়াইল জেলা পুলিশ অদ্য ২৬ ফেব্রুয়ারি ২৩ ইং রাত অনুমান ০৪.০৫ ঘটিকার সময় নড়াগাতী থানাধীন বিলাহর মাঠে জনৈক সবুর এর কলাই ক্ষেত থেকে ভিকটিম মৃত দীপ্ত সাহা এর খোয়া যাওয়া মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার করে এবং মোটরসাইকেলটি জব্দতালিকা মূলে জব্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে। উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলা স্ব-উদ্দ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) রেজোয়ান এর উপর অর্পণ করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) রেজোয়ান হত্যাকান্ড সংক্রান্তে আসামী সুমন সরকার(৩০)সজীব কুমার বিশ্বাস (২২)আকাশ রায় (২১) ও মোঃ সাদ্দাম হোসেন বদির(৩২) দের অত্র মামলা সংক্রান্তে গ্রেফতার করতঃ হেফাজতে নেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস, আকাশ রায় ও ভিকটিম দীপ্ত সকলেই মাদকাসক্ত। তারা একসাথে বসেই মাদক সেবন করতো। আসামী সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস ও আকাশ রায় দের টাকা প্রয়োজন হলে তারা ভিকটিম দীপ্তকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিনতাই করবে মর্মে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আসমীরা ভিকটিম দীপ্তকে মোবাইল করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। ভিকটিম দীপ্ত ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা দীপ্তকে গাঁজা সেবনের উদ্দেশ্যে গাঁজা বানাতে দেয়।
দীপ্ত গাঁজার মসলা বানাতে ব্যস্ত থাকাকালে আসামী আকাশ ও সজীব দীপ্তর গলায় পেছন থেকে নাইলোনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দড়ির এক প্রান্তে আকাশ ও অপর প্রান্তে সজীব টেনে ধরে দীপ্তর মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত দীপ্তর পকেট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি বের করে নিয়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পুকুরে দীপ্তর মৃতদেহ ফেলে দেয়। এরপর আসামী আকাশ ও সজীব আসামী সুমনকে মোবাইল ফোন করে জানায় যে, তারা দীপ্তকে মেরে ফেলেছে, , দীপ্তর মোটরসাইকেলে তেল কিনার জন্য টাকার প্রয়োজন।
আসামী সুমন টাকার ব্যবস্থা করছি বলে ফোন কেটে দেয়। আসামী সজীব ও আকাশ ভিকটিম দীপ্ত এর মোটরসাইকেল নিয়ে বারইপাড়া খেয়াঘাট পার হয়ে কালিয়া বাজার থেকে মোটরসাইকেলে ৫০ টাকার তেল ভরে অপর পলাতক আসামি সজীব পিতা-হাবিব শেখ, সাং-যোগানিয়া, থানা-নড়াগাতী, জেলা-নড়াইল এর নিকট মোটরসাইকেল বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে রেখে আসে। আসামী সজিব ও আকাশদ্বয় ভিকটিমের মোটরসাইকেলটি আসামী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বদির নিকট রয়েছে মর্মে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে।
আমাতুল মোর্শেদা,বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমালী আদালত-২,নড়াইল আদালতে সোপর্দ করা হলে অভিযুক্তরা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টাসহ মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান রেশমা শারমিন, পুলিশ সুপার, পিবিআই, যশোর জেলা।