ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লোহাগাড়ার পদুয়ায় এক পরিবারের টিনের বাউন্ডারি ভাংচুরের অভিযোগ ! লোহাগাড়ায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগ সোহরাব হোসেন বুলবুল গ্রেপ্তার বাকেরগঞ্জে ১০ টি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার চোরচক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার প্রায় দুই শতাধিক চোরাই রিক্সার আলামত উদ্ধার বদলগাছীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু  জীনামেজু টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট” এর শিক্ষকদের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান   মধুপুরে ঈদের সামনে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে জরিমানা পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাকেরগঞ্জ বাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য নাঈম মৃধা সাভার থেকে গর্ভবতী নারীকে অপহরণের অভিযোগ, নেপথ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী আসলাম পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন  বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন খান অপু! 

শাহবাগের প্রহসনের আন্দোলন নিয়ে নাট্যনির্মাতা রানা বর্তমানের তীব্র ক্ষোভ

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ১০:৫০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
  • ৩২০৭ বার পড়া হয়েছে

 একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার শিক্ষিত প্রজন্মের চেতনা, সততা ও সাহসিকতার উপর। বাংলাদেশে যখনই অন্যায়, বৈষম্য বা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তরুণেরা পথে নেমেছে, তখন ইতিহাস নতুন মোড় নিয়েছে। শাহবাগ হয়ে উঠেছে সেই সব আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। অথচ আজ, সেই শাহবাগেই দাঁড়িয়ে একজন আদর্শিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যনির্মাতা রানা বর্তমান প্রশ্ন তুলছেন “এরা ছাত্র, না ভাড়া করা টোকাই?”

সাম্প্রতিক শাহবাগ আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের দাবির পক্ষে কিছু শিক্ষার্থী সমবেত হয়। কিন্তু সেখানকার বাস্তব চিত্র দেখে নাট্য নির্মাতা রানা বর্তমান হতবাক। একটি ব্যক্তিগত মিটিং শেষে শাহবাগ এলাকায় প্রবেশ করে তিনি দেখেন, মাত্র ১০–১২ জন যুবকের “আন্দোলন” পুরো শাহবাগ অচল করে দিয়েছে। ভিডিওতে এক তরুণের অশোভন আচরণ এবং ‘TEN’ শব্দের বানান বলতে না পারার মতো লজ্জাজনক অজ্ঞতা দেখে তিনি বলেন, “এই আচরণে আমি এতটাই অবাক হয়েছিলাম যে ভিডিও করতে বাধ্য হই।”

এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। রানা বর্তমান জানান, ভিডিওর তথাকথিত ছাত্রটি পালিয়ে যায় এবং আশেপাশে তেমন কোনো দায়িত্বশীল নেতৃত্ব চোখে পড়লো না। শেষে, একজনকে ভদ্রভাবে অনুরোধ করে রাস্তায় ফেলে রাখা বাঁশ সরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে আসেন।

কিন্তু এই ঘটনার কিছুক্ষন আগেই হতাশার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে টিএসসি ও রাজু ভাস্কর্যের কাছে। সেখানে ‘আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানারের নিচে কয়েকজন আড্ডায় মেতে আছে। অস্থায়ী তাবুতে ঝোলানো স্যালাইনের প্যাকেট— তাতে নেই কোনো স্যালাইন, নেই আন্দোলনের বাস্তব উত্তাপ, আছে কেবল নাটকীয়তা।

প্রশ্ন ওঠে এটি কি আদৌ কোনো আদর্শিক আন্দোলন, নাকি একটি ঠুনকো দৃশ্যপট, যেখানে উদ্দেশ্য ব্যক্তিস্বার্থ, এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা?

নাট্য নির্মাতা রানা বর্তমান বলেন, “এই শাহবাগেই একদিন আমি ও আমার সহযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলনে নেমেছিলাম। আজ মনে হয়, সেই গৌরবময় অধ্যায় কলঙ্কিত হচ্ছে কিছু তথাকথিত ব্যক্তির কারণে।” অভুথ্থানের স্প্রীড নষ্ট করছে কিছু তথাকথিত ব্যক্তির স্বার্থের কারণে।

তিনি স্পষ্ট করে জানান, “আমার আন্দোলন কোন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং প্রতিবাদ ছিলো তার ১৬ বছরের অপকর্ম, অন্যায় ও স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। আজকের কয়েকজন তরুণদের আচরণ প্রমাণ করে, তারা সেই একই পথের সুবিধাভোগী যারা জনস্বার্থ নয়, নিজেদের সুবিধার জন্য আন্দোলনের মোড়ক ব্যবহার করছে।”

এই বাস্তবতা বিবেচনায় রানা বর্তমান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলেছেন: যাদের অফিস নাই শুধুু কয়েকজনের দাবি / ব্যাকিগত দাবি-প্রতিবাদ সভা ও সম্মেলনের জন্য যেন একটি নির্দিষ্ট, আলাদা স্থান বরাদ্দ করা হয়। যেন শহরের জনজীবন ব্যাহত না হয় এবং আন্দোলন বাস্তবেই গণচেতনার প্রতিফলন হয়, শুধুমাত্র রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চ না হয়ে দাঁড়ায়।

সবশেষে রানা বর্তমানের জিজ্ঞাসা— “এরা ছাত্র, না ছাত্রবেশে কিছু বেয়াদব? যারা কেবল পরিবেশ নষ্ট করতে এসেছে? মেধাবী ও আদর্শিক ছাত্রদের কণ্ঠ রোধ করতেই যেন এরা সংঘবদ্ধ হয়েছে। ২৪-এর অভ্যুত্থানকে এরা ধর্ষণ করতে উঠে-পড়ে লেগেছে।”

এটি শুধু একজন রানা বর্তমানের প্রশ্ন নয়, বরং তা প্রতিধ্বনি তুলছে লক্ষ মানুষের মনে যারা সত্যিকারের পরিবর্তনের আশায় চোখ রাখে তরুণদের দিকে। আন্দোলন হোক, হোক আদর্শিক, হোক তারুণ্যের আলোয় আলোকিত। কিন্তু তা যেন হয় বাস্তব ও সৎ চেতনায় উজ্জীবিত, কোন ভাবে যেন জনভোগান্তির কারণ হয়ে সমাজের প্রতি মানুষকে বিমুখ না করে।

লেখকঃ রানা বর্তমান,নাট‍্য নির্মাতা ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

লোহাগাড়ার পদুয়ায় এক পরিবারের টিনের বাউন্ডারি ভাংচুরের অভিযোগ !

শাহবাগের প্রহসনের আন্দোলন নিয়ে নাট্যনির্মাতা রানা বর্তমানের তীব্র ক্ষোভ

আপডেট সময় : ১০:৫০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

 একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার শিক্ষিত প্রজন্মের চেতনা, সততা ও সাহসিকতার উপর। বাংলাদেশে যখনই অন্যায়, বৈষম্য বা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তরুণেরা পথে নেমেছে, তখন ইতিহাস নতুন মোড় নিয়েছে। শাহবাগ হয়ে উঠেছে সেই সব আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। অথচ আজ, সেই শাহবাগেই দাঁড়িয়ে একজন আদর্শিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যনির্মাতা রানা বর্তমান প্রশ্ন তুলছেন “এরা ছাত্র, না ভাড়া করা টোকাই?”

সাম্প্রতিক শাহবাগ আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের দাবির পক্ষে কিছু শিক্ষার্থী সমবেত হয়। কিন্তু সেখানকার বাস্তব চিত্র দেখে নাট্য নির্মাতা রানা বর্তমান হতবাক। একটি ব্যক্তিগত মিটিং শেষে শাহবাগ এলাকায় প্রবেশ করে তিনি দেখেন, মাত্র ১০–১২ জন যুবকের “আন্দোলন” পুরো শাহবাগ অচল করে দিয়েছে। ভিডিওতে এক তরুণের অশোভন আচরণ এবং ‘TEN’ শব্দের বানান বলতে না পারার মতো লজ্জাজনক অজ্ঞতা দেখে তিনি বলেন, “এই আচরণে আমি এতটাই অবাক হয়েছিলাম যে ভিডিও করতে বাধ্য হই।”

এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। রানা বর্তমান জানান, ভিডিওর তথাকথিত ছাত্রটি পালিয়ে যায় এবং আশেপাশে তেমন কোনো দায়িত্বশীল নেতৃত্ব চোখে পড়লো না। শেষে, একজনকে ভদ্রভাবে অনুরোধ করে রাস্তায় ফেলে রাখা বাঁশ সরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে আসেন।

কিন্তু এই ঘটনার কিছুক্ষন আগেই হতাশার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে টিএসসি ও রাজু ভাস্কর্যের কাছে। সেখানে ‘আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানারের নিচে কয়েকজন আড্ডায় মেতে আছে। অস্থায়ী তাবুতে ঝোলানো স্যালাইনের প্যাকেট— তাতে নেই কোনো স্যালাইন, নেই আন্দোলনের বাস্তব উত্তাপ, আছে কেবল নাটকীয়তা।

প্রশ্ন ওঠে এটি কি আদৌ কোনো আদর্শিক আন্দোলন, নাকি একটি ঠুনকো দৃশ্যপট, যেখানে উদ্দেশ্য ব্যক্তিস্বার্থ, এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা?

নাট্য নির্মাতা রানা বর্তমান বলেন, “এই শাহবাগেই একদিন আমি ও আমার সহযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলনে নেমেছিলাম। আজ মনে হয়, সেই গৌরবময় অধ্যায় কলঙ্কিত হচ্ছে কিছু তথাকথিত ব্যক্তির কারণে।” অভুথ্থানের স্প্রীড নষ্ট করছে কিছু তথাকথিত ব্যক্তির স্বার্থের কারণে।

তিনি স্পষ্ট করে জানান, “আমার আন্দোলন কোন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং প্রতিবাদ ছিলো তার ১৬ বছরের অপকর্ম, অন্যায় ও স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। আজকের কয়েকজন তরুণদের আচরণ প্রমাণ করে, তারা সেই একই পথের সুবিধাভোগী যারা জনস্বার্থ নয়, নিজেদের সুবিধার জন্য আন্দোলনের মোড়ক ব্যবহার করছে।”

এই বাস্তবতা বিবেচনায় রানা বর্তমান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলেছেন: যাদের অফিস নাই শুধুু কয়েকজনের দাবি / ব্যাকিগত দাবি-প্রতিবাদ সভা ও সম্মেলনের জন্য যেন একটি নির্দিষ্ট, আলাদা স্থান বরাদ্দ করা হয়। যেন শহরের জনজীবন ব্যাহত না হয় এবং আন্দোলন বাস্তবেই গণচেতনার প্রতিফলন হয়, শুধুমাত্র রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চ না হয়ে দাঁড়ায়।

সবশেষে রানা বর্তমানের জিজ্ঞাসা— “এরা ছাত্র, না ছাত্রবেশে কিছু বেয়াদব? যারা কেবল পরিবেশ নষ্ট করতে এসেছে? মেধাবী ও আদর্শিক ছাত্রদের কণ্ঠ রোধ করতেই যেন এরা সংঘবদ্ধ হয়েছে। ২৪-এর অভ্যুত্থানকে এরা ধর্ষণ করতে উঠে-পড়ে লেগেছে।”

এটি শুধু একজন রানা বর্তমানের প্রশ্ন নয়, বরং তা প্রতিধ্বনি তুলছে লক্ষ মানুষের মনে যারা সত্যিকারের পরিবর্তনের আশায় চোখ রাখে তরুণদের দিকে। আন্দোলন হোক, হোক আদর্শিক, হোক তারুণ্যের আলোয় আলোকিত। কিন্তু তা যেন হয় বাস্তব ও সৎ চেতনায় উজ্জীবিত, কোন ভাবে যেন জনভোগান্তির কারণ হয়ে সমাজের প্রতি মানুষকে বিমুখ না করে।

লেখকঃ রানা বর্তমান,নাট‍্য নির্মাতা ।