ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এই স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো নয় ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় নিয়ে একাই চলতে হয়! তাহিরপুরে ঝুঁকি নিয়ে ২০ গ্রামের মানুষের ভাঙা ব্রিজ পারাপার বাগমারায় নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত-আবুল কালাম আজাদ বাগেরহাটে হযরত খানজাহানের দীঘি থেকে ভ্যান চালকের মরদেহ উদ্ধার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ে নৌকায় ভোট দিন : আব্দুল হাফিজ মল্লিক! নৌকা মানে উন্নয়ন,দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিন : দারা রানীশংকৈলে কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সার ও বীজ বিতরণ বাকেরগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত গারুড়িয়ায় লাঙ্গল মার্কার পক্ষে কাইয়ুম খানের উদ্যোগে প্রচার মিছিল ও শোডাউন সম্মাননা পেলেন ডা. মোঃ জয়নাল

শিল্পীদের উপকার করতে গিয়ে প্রযোজকই হলেন প্রতারণার শিকার

  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • ২০৩১ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন প্রতিবেদক :- চলতি বছরে হুট করেই তারকাদের পেজে একজনের নাম ভেসে উঠতো, ‘মোহাম্মদ মিজানুর রহমান’। অনেক শিল্পী তাঁকে ধন্যবাদ দিতেন, ভালোবেসে ডাকতেন ‘ম্যাজিক ম্যান’। সেই পোস্টে থাকত আমেরিকার নীল চিঠি। যেখানে লেখা, আপনার ভিসা অ্যাকসেপ্ট হয়েছে।

এই মিজানুর রহমানকে সম্বোধন করে অনেকেই পোস্ট দিয়েছেন। তালিকায় আছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরী, সামিরা খান মাহি, বিপাশা কবির, রেসি, জয় চৌধুরী, শিপন আহমেদ, নির্মতা শামীম আহমেদ রনি, শাফি উদ্দিন শাফিসহ অনেকেই।

ম্যাজিকম্যানের পরিচয়—তিনি আমেরিকা প্রবাসী ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘জাদুকাঠি মিডিয়া’র কর্ণধার। যার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এনেছে ‘নায়ক’ নামের চলচ্চিত্র। নির্মাণ শুরু করেছেন আরও দুটি ছবির। আর এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি মিজানুর রহমানের। গত ও চলতি বছর তাঁর আমন্ত্রণে দেশের মিডিয়ার ৪০ জনের বেশি শিল্পী-নির্মাতা পেয়েছেন আমেরিকায় ঘুরতে যাওয়ার ভিসা।

এবার তারকাদের দেওয়া পোস্টগুলোই কাল হলো প্রযোজকের। কারণ, এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন আরেক প্রবাসী বাংলাদেশি এমদাদুল হক মামুন। মিজানুর রহমানের নাম ব্যবহার করে তিনি তৈরি করেন স্পন্সর কার্ড। ভিসার দেওয়ার নামে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। প্রায় ২০-২২ জনের সঙ্গে চুক্তি করেছে ৪ কোটি টাকার। বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে বলেছেন প্রযোজক মিজানুর রহমান।

তাঁর ভাষ্য, ‘তারকারা ভিসা পাওয়ার পোস্ট দিত। আর এতে করে ছড়িয়ে যায়, আমার কাগজপত্র খুবই শক্তিশালী। সেটাই কাজে লাগায় আমাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জেরই এক প্রবাসী। উনার নাম এমদাদুল হক মামুন। তিনি কোনো এক তারকাকে দেওয়া আমার স্পন্সর কাগজ কপি করেন এবং আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে জমা দেন। এরইমধ্যে সেলিম মোল্লা ও শরীফ তাসের উদ্দিন নামের দুজন ভিসা ফেসও করতে যান। সম্প্রতি আমি বাড়ি পরিবর্তন করেছি। ফলে ঠিকানার মিল না পাওয়ায় বা অসামঞ্জস্যতা দেখায় অ্যাম্বাসি আমার অ্যাটর্নির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখনই বিষয়টি উদঘাটন হয়। আমি বুঝতে পারি আমার পুরনো কাগজ নকল করা হচ্ছে।’

এদিকে মিজানুর রহমানের স্পন্সরশিপ ও আমন্ত্রণপত্রের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, চিত্রনায়ক শিপন ও জয় চৌধুরীর সঙ্গে। মাহি ফোন না ধরলেন কথা বলেন শিপন ও জয়।

জয় বলেন, ‘মূলত কৃতজ্ঞতা থেকে আমরা পোস্টটা দিয়েছিলাম। মিজানুর রহমান আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বড় ভাই। তিনি ইউএসএ পাসপোর্টধারী ও ভালো ব্যবসায়ী। ফলে তাঁর আমন্ত্রণের কারণে দ্রুতই ভিসা হয়েছিল। এই কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে আমরা পোস্টটি করি। তবে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটবে তা বুঝতে পারিনি।’

শিপন জানান, গত সেপ্টেম্বরে তিনি তাঁর মা’সহ আমেরিকার ভিসা পেয়েছেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত এমদাদুল হক মামুন প্রসঙ্গে জানা যায়, আমেরিকার নিউইয়র্কে থাকেন তিনি। সেখানেই কাজ করেন। মিজান ও মামুনের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। একই এলাকায় হওয়ায় মামুন লোকজনকে জানান, মিজানুর রহমান অসুস্থ। কেউ যেতে চাইলে তার পক্ষ থেকে ভিসার স্পন্সরের কাগজ দিয়ে দেবেন তিনি। এভাবে জনপ্রতি একক ভিসার জন্য ২০ লাখ টাকা ও ফ্যামিলিভিসার জন্য ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন।

আবেদন করার জন্য অগ্রিম এক লাখ টাকা, আবেদনের পর আমেরিকান দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ হলে ১০ লাখ টাকা এবং ভিসা পেলে বাকি দশ লাখ টাকার চুক্তি করেন এই মামুন। পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করছেন খোকন নামের এক সহযোগী। এবং ভিসার আবেদনের জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে যাতায়াত করেন পলাশ ও ওয়াসিম নামের দুজন। পলাশের সঙ্গে মামুনের মনোমালিন্যের পর ওয়াসিম এই কাজটি করছেন।

অন্যদিকে, মিজান জানান, তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ও ব্যবসার কাগজপত্রগুলো বের করতে মামুন সাহায্য নেন সাইমন সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। যেখান থেকে বাংলাদেশি তারকারা ভিসার আবেদন ফরম ফিলআপ করতেন।

প্রযোজক মিজান বলেন, ‘প্রথম যখন ভিসা অ্যাপ্রুভ হলো, তখন অনেক তারকাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। আমি তখন সাইমন গ্লোবাল নামের একটি ভিসা প্রসেসিং সেন্টার থেকেই এগুলো করার চেষ্টা করতাম। কারণ এতে, বারবার তথ্য দিতে হতো না। আর এটারই সুযোগ ব্যবহার করেন মামুন। ভিসা প্রসেসিংয়ের সঙ্গে যুক্ত মোহনা নামের এক নারীকর্মী ভিসায় আমার কাগজপত্রগুলো সাবমিট করে দিতে থাকেন। সেই নারীকে আইফোন গিফট করেন এবং আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখান। কিন্তু প্রথম দুটি ভিসা আবেদন বাতিল হওয়ার পর, আমার কাগজ ব্যবহার বন্ধ করে দেয় তারা। তবে প্রায় ২০-২২ জনের কাছে আমার নামে টাকা নিয়েছেন।’

মিজান আরও জানান, এলাকার বেশ কিছু ভুক্তভোগী এখন টাকার জন্য হাজির হচ্ছেন তাঁর গ্রামের বাড়িতে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৯ অক্টোবর আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে ভিসা ফেস করার কথা ছিল সেলিম মোল্লার। যদিও অবরোধ থাকায় এই তারিখের বদলে ১৪ নভেম্বর ভিসা ফেস করতে হয় তাঁকে। আর গত ৩০ অক্টোবর সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাম্বাসিতে গিয়েছিলেন শরীফ উদ্দিন। তবে তাঁরা দুজনই রিজেক্ট হয়েছেন। তাঁরা ব্যবহার করেন মিজানুর রহমানের নামে তৈরি করা ভুয়া স্পন্সরশিপ পেপার। এরমধ্যে শরীফ মিজানের পাশাপাশি আনিসুর রহমানের তৈরি কাগজও ব্যবহার করেছেন। এরপর আরও কয়েকজন দাঁড়ালেও পাননি ভিসা। এছাড়া ১৯ নভেম্বর একজন ও ১১ ডিসেম্বর দুই পরিবারের আরও চারজন সাক্ষাৎকারের সময় পেয়েছেন।

এরমধ্যে সেলিম মোল্লার সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকের সাথে। তিনি জানান, এমদাদুল হক মামুন আমেরিকায় যাওয়ার জন্য তাকে স্পন্সর করেছেন। মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নামের কাউকে চেনেন না। পরে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এর ঘণ্টাখানেক পর তিনি নিজেই ফোন করে উল্টো দাবি করেন। বলেন, তাঁর স্পন্সর করেছেন মিজানুর রহমান

তখন মিজানুর রহমানকে তিনি চেনেন কিনা বা তাঁকে মিজানুর রহমান চেনেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, চেনা জানা ছাড়াও তো স্পন্সর করা যায়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

এই স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো নয় ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় নিয়ে একাই চলতে হয়!

শিল্পীদের উপকার করতে গিয়ে প্রযোজকই হলেন প্রতারণার শিকার

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

বিনোদন প্রতিবেদক :- চলতি বছরে হুট করেই তারকাদের পেজে একজনের নাম ভেসে উঠতো, ‘মোহাম্মদ মিজানুর রহমান’। অনেক শিল্পী তাঁকে ধন্যবাদ দিতেন, ভালোবেসে ডাকতেন ‘ম্যাজিক ম্যান’। সেই পোস্টে থাকত আমেরিকার নীল চিঠি। যেখানে লেখা, আপনার ভিসা অ্যাকসেপ্ট হয়েছে।

এই মিজানুর রহমানকে সম্বোধন করে অনেকেই পোস্ট দিয়েছেন। তালিকায় আছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরী, সামিরা খান মাহি, বিপাশা কবির, রেসি, জয় চৌধুরী, শিপন আহমেদ, নির্মতা শামীম আহমেদ রনি, শাফি উদ্দিন শাফিসহ অনেকেই।

ম্যাজিকম্যানের পরিচয়—তিনি আমেরিকা প্রবাসী ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘জাদুকাঠি মিডিয়া’র কর্ণধার। যার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এনেছে ‘নায়ক’ নামের চলচ্চিত্র। নির্মাণ শুরু করেছেন আরও দুটি ছবির। আর এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি মিজানুর রহমানের। গত ও চলতি বছর তাঁর আমন্ত্রণে দেশের মিডিয়ার ৪০ জনের বেশি শিল্পী-নির্মাতা পেয়েছেন আমেরিকায় ঘুরতে যাওয়ার ভিসা।

এবার তারকাদের দেওয়া পোস্টগুলোই কাল হলো প্রযোজকের। কারণ, এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন আরেক প্রবাসী বাংলাদেশি এমদাদুল হক মামুন। মিজানুর রহমানের নাম ব্যবহার করে তিনি তৈরি করেন স্পন্সর কার্ড। ভিসার দেওয়ার নামে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। প্রায় ২০-২২ জনের সঙ্গে চুক্তি করেছে ৪ কোটি টাকার। বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে বলেছেন প্রযোজক মিজানুর রহমান।

তাঁর ভাষ্য, ‘তারকারা ভিসা পাওয়ার পোস্ট দিত। আর এতে করে ছড়িয়ে যায়, আমার কাগজপত্র খুবই শক্তিশালী। সেটাই কাজে লাগায় আমাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জেরই এক প্রবাসী। উনার নাম এমদাদুল হক মামুন। তিনি কোনো এক তারকাকে দেওয়া আমার স্পন্সর কাগজ কপি করেন এবং আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে জমা দেন। এরইমধ্যে সেলিম মোল্লা ও শরীফ তাসের উদ্দিন নামের দুজন ভিসা ফেসও করতে যান। সম্প্রতি আমি বাড়ি পরিবর্তন করেছি। ফলে ঠিকানার মিল না পাওয়ায় বা অসামঞ্জস্যতা দেখায় অ্যাম্বাসি আমার অ্যাটর্নির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখনই বিষয়টি উদঘাটন হয়। আমি বুঝতে পারি আমার পুরনো কাগজ নকল করা হচ্ছে।’

এদিকে মিজানুর রহমানের স্পন্সরশিপ ও আমন্ত্রণপত্রের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, চিত্রনায়ক শিপন ও জয় চৌধুরীর সঙ্গে। মাহি ফোন না ধরলেন কথা বলেন শিপন ও জয়।

জয় বলেন, ‘মূলত কৃতজ্ঞতা থেকে আমরা পোস্টটা দিয়েছিলাম। মিজানুর রহমান আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বড় ভাই। তিনি ইউএসএ পাসপোর্টধারী ও ভালো ব্যবসায়ী। ফলে তাঁর আমন্ত্রণের কারণে দ্রুতই ভিসা হয়েছিল। এই কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে আমরা পোস্টটি করি। তবে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটবে তা বুঝতে পারিনি।’

শিপন জানান, গত সেপ্টেম্বরে তিনি তাঁর মা’সহ আমেরিকার ভিসা পেয়েছেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত এমদাদুল হক মামুন প্রসঙ্গে জানা যায়, আমেরিকার নিউইয়র্কে থাকেন তিনি। সেখানেই কাজ করেন। মিজান ও মামুনের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। একই এলাকায় হওয়ায় মামুন লোকজনকে জানান, মিজানুর রহমান অসুস্থ। কেউ যেতে চাইলে তার পক্ষ থেকে ভিসার স্পন্সরের কাগজ দিয়ে দেবেন তিনি। এভাবে জনপ্রতি একক ভিসার জন্য ২০ লাখ টাকা ও ফ্যামিলিভিসার জন্য ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন।

আবেদন করার জন্য অগ্রিম এক লাখ টাকা, আবেদনের পর আমেরিকান দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ হলে ১০ লাখ টাকা এবং ভিসা পেলে বাকি দশ লাখ টাকার চুক্তি করেন এই মামুন। পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করছেন খোকন নামের এক সহযোগী। এবং ভিসার আবেদনের জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে যাতায়াত করেন পলাশ ও ওয়াসিম নামের দুজন। পলাশের সঙ্গে মামুনের মনোমালিন্যের পর ওয়াসিম এই কাজটি করছেন।

অন্যদিকে, মিজান জানান, তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ও ব্যবসার কাগজপত্রগুলো বের করতে মামুন সাহায্য নেন সাইমন সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। যেখান থেকে বাংলাদেশি তারকারা ভিসার আবেদন ফরম ফিলআপ করতেন।

প্রযোজক মিজান বলেন, ‘প্রথম যখন ভিসা অ্যাপ্রুভ হলো, তখন অনেক তারকাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। আমি তখন সাইমন গ্লোবাল নামের একটি ভিসা প্রসেসিং সেন্টার থেকেই এগুলো করার চেষ্টা করতাম। কারণ এতে, বারবার তথ্য দিতে হতো না। আর এটারই সুযোগ ব্যবহার করেন মামুন। ভিসা প্রসেসিংয়ের সঙ্গে যুক্ত মোহনা নামের এক নারীকর্মী ভিসায় আমার কাগজপত্রগুলো সাবমিট করে দিতে থাকেন। সেই নারীকে আইফোন গিফট করেন এবং আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখান। কিন্তু প্রথম দুটি ভিসা আবেদন বাতিল হওয়ার পর, আমার কাগজ ব্যবহার বন্ধ করে দেয় তারা। তবে প্রায় ২০-২২ জনের কাছে আমার নামে টাকা নিয়েছেন।’

মিজান আরও জানান, এলাকার বেশ কিছু ভুক্তভোগী এখন টাকার জন্য হাজির হচ্ছেন তাঁর গ্রামের বাড়িতে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৯ অক্টোবর আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে ভিসা ফেস করার কথা ছিল সেলিম মোল্লার। যদিও অবরোধ থাকায় এই তারিখের বদলে ১৪ নভেম্বর ভিসা ফেস করতে হয় তাঁকে। আর গত ৩০ অক্টোবর সাক্ষাৎকারের জন্য অ্যাম্বাসিতে গিয়েছিলেন শরীফ উদ্দিন। তবে তাঁরা দুজনই রিজেক্ট হয়েছেন। তাঁরা ব্যবহার করেন মিজানুর রহমানের নামে তৈরি করা ভুয়া স্পন্সরশিপ পেপার। এরমধ্যে শরীফ মিজানের পাশাপাশি আনিসুর রহমানের তৈরি কাগজও ব্যবহার করেছেন। এরপর আরও কয়েকজন দাঁড়ালেও পাননি ভিসা। এছাড়া ১৯ নভেম্বর একজন ও ১১ ডিসেম্বর দুই পরিবারের আরও চারজন সাক্ষাৎকারের সময় পেয়েছেন।

এরমধ্যে সেলিম মোল্লার সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকের সাথে। তিনি জানান, এমদাদুল হক মামুন আমেরিকায় যাওয়ার জন্য তাকে স্পন্সর করেছেন। মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নামের কাউকে চেনেন না। পরে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এর ঘণ্টাখানেক পর তিনি নিজেই ফোন করে উল্টো দাবি করেন। বলেন, তাঁর স্পন্সর করেছেন মিজানুর রহমান

তখন মিজানুর রহমানকে তিনি চেনেন কিনা বা তাঁকে মিজানুর রহমান চেনেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, চেনা জানা ছাড়াও তো স্পন্সর করা যায়।