ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জরুরি নির্দেশনা! হাটহাজারী দক্ষিণ মাদার্শা এলাকায় জবরদখল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ের কেয়ারটেকার গোলাম মোস্তফার উপর হামলা দাসের জঙ্গল বাজার বণিক সমিতি নির্বাচনে সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুজন হাওলাদার নদী ভাঙ্গনে দিশেহারা অসহায় দক্ষিণ সাদিশের মানুষ বাকলিয়ায় ১৫ যুবদলের কর্মীকে যুবলীগ সাজিয়ে হত্যা মামলা ভূয়া র‍্যাব সদস্য পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনার মূলহোতা রাকিব সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ মানবিক রক্ত ব্যাংকের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত! গাজীপুর প্রেসক্লাবের ২০২৪-২৫ নির্বাচন অনুষ্ঠিত মাসুদুল সভাপতি, নজরুল সাধারণ সম্পাদক

সীতাকুণ্ডে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে নারী উদ্যোক্তার সাফল্য

  • আপডেট সময় : ১১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • ২১০৫ বার পড়া হয়েছে

আবদুল মামুন,সীতাকুণ্ড-

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সফল নারী উদ্যোক্তা সায়েরা আমিন। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও ব্যবহারে কৃষকদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সারে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকেরা। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটির গঠন ও বুনট উন্নত করে পানি ধারণক্ষমতা বাড়ায়, পানির অপচয় রোধ করে। এ সার মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ইট দিয়ে চতূর্ভুজ আকারে বানানো হাউসে ৮টি উপাদানের সংমিশ্রণে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরী করতে হয়। এতে গোবর ২৮ শতাংশ, মুরগির বিষ্ঠা ৩৬ শতাংশ, বিভিন্ন সবজির উচ্ছিষ্ট ৫ শতাংশ, কচুরিপানা ২৫ শতাংশ, কাঠের গুঁড়া ৩ শতাংশ, নিমপাতা ১ শতাংশ ও চিটাগুড় ২ শতাংশ-এই অনুপাতে মিশ্রণ তৈরী করা হয়। এক টন মিশ্রণ পচাতে ৫০০ মিলি ট্রাইকোড্রামা অণুজীব মেশাতে হয়। এতে ৪৫ দিনের মধ্যে জৈব পদার্থ পচে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদিত হয়। উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম বাকখালী মধ্যেরধারী এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জৈব ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন প্রবাসী আব্দুর রহমানের স্ত্রী সায়েরা আমিন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাণিজ্যিকভাবে ২০ ফুট প্রস্থ ও ২৫ ফুট দৈর্ঘের ইট দিয়ে বানানো হাউজে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনের এই প্রকল্প। প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩ টন সার উৎপাদন করে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেন কেজি প্রতি ২২ টাকা দরে। যার উৎপাদন খরচ ৫০ হাজার টাকা, প্রথম বারে লাভের মুখ দেখে খুশি সায়েরা আমিন। নিজে একা শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর অধীনে কর্মসংস্থান হয়েছে তিন জনের, আরো বাড়াতে চান এর পরিধি। করতে চান আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদন ব্যবস্থা এতে খরচ যেমন কমবে, তেমনি বাড়বে উৎপাদন। নারী উদ্যোক্তা সায়েরা আমিন বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ্ স্যারের অনুপ্রেরণায় শুরু করেছি ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন প্রকল্প। নারী হয়েও শত প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শুরু করেছি। বর্তমানে উৎপাদিত এসব সার ছাদ বাগানসহ বিভিন্ন কৃষি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতা অর্ডার করেন অনলাইনে। নিজের হাতে গড়া প্রকল্প ঘুরে দেখাতে গিয়ে বলেন, ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সবচেয়ে বেশী কাঁচামাল হিসেবে প্রয়োজন গোবর, যা সংগ্রহ করা কঠিন। এর চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন নিজস্ব গরুর খামার ব্যবস্থা। সরকারী-বেসরকারী সহায়তা পেলে গড়তে চান গরুর খামার। এতে করে বড় পরিসরে করতে পারবেন এই প্রকল্প। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পৌঁছাবে অন্য জেলাতেও, এমনটা আশা করেন তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুল্লাহ্ বলেন, আমাদের মাটিতে যে পরিমাণ জৈব পদার্থ থাকা প্রয়োজন তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ মাটিতে আছে। জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ালে গাছ ঠিক মতো খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে, ফলন ভালো হয় ও গাছ সুস্থ থাকে। সে কারণে আমরা কৃষকদের জৈব সার উৎপাদন শিখিয়ে থাকি। ট্রাইকো কম্পোস্ট একটি উন্নতমানের জৈব সার। এটি ব্যবহারে জৈব পদার্থ দ্রুত জৈব সারে পরিণত হয়। এই ধরনের কার্যক্রম আমরা কৃষি উদ্যোক্তাদের শিখিয়ে যাচ্ছি। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সায়েরা আমিন। সে নারী হয়েও নিজেকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তুলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাকে সব সময় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছি এবং আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে সে নিজেকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এই আশা করছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১

সীতাকুণ্ডে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে নারী উদ্যোক্তার সাফল্য

আপডেট সময় : ১১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

আবদুল মামুন,সীতাকুণ্ড-

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সফল নারী উদ্যোক্তা সায়েরা আমিন। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও ব্যবহারে কৃষকদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সারে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকেরা। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটির গঠন ও বুনট উন্নত করে পানি ধারণক্ষমতা বাড়ায়, পানির অপচয় রোধ করে। এ সার মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ইট দিয়ে চতূর্ভুজ আকারে বানানো হাউসে ৮টি উপাদানের সংমিশ্রণে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরী করতে হয়। এতে গোবর ২৮ শতাংশ, মুরগির বিষ্ঠা ৩৬ শতাংশ, বিভিন্ন সবজির উচ্ছিষ্ট ৫ শতাংশ, কচুরিপানা ২৫ শতাংশ, কাঠের গুঁড়া ৩ শতাংশ, নিমপাতা ১ শতাংশ ও চিটাগুড় ২ শতাংশ-এই অনুপাতে মিশ্রণ তৈরী করা হয়। এক টন মিশ্রণ পচাতে ৫০০ মিলি ট্রাইকোড্রামা অণুজীব মেশাতে হয়। এতে ৪৫ দিনের মধ্যে জৈব পদার্থ পচে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদিত হয়। উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম বাকখালী মধ্যেরধারী এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জৈব ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন প্রবাসী আব্দুর রহমানের স্ত্রী সায়েরা আমিন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাণিজ্যিকভাবে ২০ ফুট প্রস্থ ও ২৫ ফুট দৈর্ঘের ইট দিয়ে বানানো হাউজে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনের এই প্রকল্প। প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩ টন সার উৎপাদন করে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেন কেজি প্রতি ২২ টাকা দরে। যার উৎপাদন খরচ ৫০ হাজার টাকা, প্রথম বারে লাভের মুখ দেখে খুশি সায়েরা আমিন। নিজে একা শুরু করলেও বর্তমানে তাঁর অধীনে কর্মসংস্থান হয়েছে তিন জনের, আরো বাড়াতে চান এর পরিধি। করতে চান আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদন ব্যবস্থা এতে খরচ যেমন কমবে, তেমনি বাড়বে উৎপাদন। নারী উদ্যোক্তা সায়েরা আমিন বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ্ স্যারের অনুপ্রেরণায় শুরু করেছি ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন প্রকল্প। নারী হয়েও শত প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শুরু করেছি। বর্তমানে উৎপাদিত এসব সার ছাদ বাগানসহ বিভিন্ন কৃষি কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতা অর্ডার করেন অনলাইনে। নিজের হাতে গড়া প্রকল্প ঘুরে দেখাতে গিয়ে বলেন, ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সবচেয়ে বেশী কাঁচামাল হিসেবে প্রয়োজন গোবর, যা সংগ্রহ করা কঠিন। এর চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন নিজস্ব গরুর খামার ব্যবস্থা। সরকারী-বেসরকারী সহায়তা পেলে গড়তে চান গরুর খামার। এতে করে বড় পরিসরে করতে পারবেন এই প্রকল্প। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পৌঁছাবে অন্য জেলাতেও, এমনটা আশা করেন তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হাবিবুল্লাহ্ বলেন, আমাদের মাটিতে যে পরিমাণ জৈব পদার্থ থাকা প্রয়োজন তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ মাটিতে আছে। জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ালে গাছ ঠিক মতো খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে, ফলন ভালো হয় ও গাছ সুস্থ থাকে। সে কারণে আমরা কৃষকদের জৈব সার উৎপাদন শিখিয়ে থাকি। ট্রাইকো কম্পোস্ট একটি উন্নতমানের জৈব সার। এটি ব্যবহারে জৈব পদার্থ দ্রুত জৈব সারে পরিণত হয়। এই ধরনের কার্যক্রম আমরা কৃষি উদ্যোক্তাদের শিখিয়ে যাচ্ছি। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সায়েরা আমিন। সে নারী হয়েও নিজেকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে তুলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাকে সব সময় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছি এবং আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে সে নিজেকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে এই আশা করছি।