ঢাকা ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শহীদ ওয়াসিমের জীবনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলন সফল হয়েছে আ.লীগের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে, হামলা মামলা হত্যা ও হয়রানীর শিকার কর্মীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ফুলপুর উপজেলা বাহাদুরপুর আঞ্জুমান উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে অনিয়ম দুর্নীতি ষড়যন্ত্র ভুগছে সহকারী শিক্ষকরা বরিশালে মাদক নিরাময় মাইন্ড কেয়ারে নারীকে যৌন হয়রানি! দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ ও বিভিন্ন মাজারে হামলার তীব্র নিন্দা আজ তরুন সাহসী সাংবাদিক জিয়াউল হক আকন এর শুভ জন্মদিন মোরেলগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা রেহেনা রিয়া ঈশ্বরগঞ্জে কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার জুড়ীর লাটিটিলা সীমান্তে দুই রোহিঙ্গা ও তিন বাংলাদেশী  আটক

২৪ ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় দুই ভাইসহ মিরপুর থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার ৩

  • মাসুদ রানা
  • আপডেট সময় : ১১:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩
  • ২২৭১ বার পড়া হয়েছে

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী জুড়ে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর কে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চুরি ও ছিনতাইকারী চক্র।এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর চুরি ছিনতাই রোদ করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানার আহাম্মেদনগরে জনৈকা সিরাজুম মুনীরার বাসার তালা ভেঙে আনুমানিক ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করা হয়। পরে সিসিটিভি দেখে জুলহাস বিল্লাল সহোদরকে শনাক্ত করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সাভার গেণ্ডা বাস স্টেশন থেকে বিল্লাল হোসেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের মতলব থেকে জুলহাসকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া চোরাই এসব স্বর্ণ রাখার অভিযোগে লিটন বর্মণ নামে এক স্বর্ণ দোকানদারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

গতকাল সাভার ও চাঁদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে এক জোড়া হাতের চুরি, এক জোড়া কানের দুল, একটি চেইন এবং গলিত রূপান্তরিত স্বর্ণসহ মোট ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ এবং বিভিন্ন ধরনের চাবি, রেঞ্জসহ চুরি করার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।১৫ বছর ধরে চুরি করে দুই ভাই!১৫ বছরে ২ শতাধিক চুরি করে দুই ভাই,৩০ মিনিটেই ২৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে তারা।গ্রেফতারকৃত দুই ভাই হলেন জুলহাস (৩১) ও বিল্লাল হোসেন (২৬) ।

ভোলার লালমোহন উপজেলার আবু কালামের ছেলে জুলহাস ও বিল্লাল। চুরি শুরু করে সেই ছোটবেলা থেকেই। দুইজনে চুরি শুরু করে ২০০৮ সাল থেকে। তখন থেকে আজ ১৫ বছর ধরেই চুরি করছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, এই ১৫ বছরে তারা দুই শতাধিক চুরি করে। চুরি করেই তারা অন্য জেলায় চলে যায়। ফলে অধিকাংশ ঘটনায় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এতগুলো চুরি করলেও তারা ধরা পরে মাত্র ১০ বারের মত। আর মামলা হয়েছে মাত্র ৩ টি! অন্যান্য সবাই সবকিছু চুরি করলেও জুলহাস বিল্লাল শুধু স্বর্ণ ও নগদ টাকা চুরি করে। কারণ এই দুইটি সহজেই বহনযোগ্য।

শুধু দিনের বেলা চুরি করে জুলহাস-বিল্লাল সাধারণত সব চোর রাতের বেলা চুরি করলেও ব্যতিক্রম এই দুই সহোদর। তারা চুরি করে দিনের বেলা। দিনের বেলা সাধারণত যে সময়টাতে বাচ্চারা স্কুলে থাকে সেই সময়টাকেই তারা চুরির জন্য বেছে নেয়। সেই সময় ঘরের পুরুষ সদস্যরা অফিসে থাকে। আর মহিলা সদস্যরা বাচ্চার স্কুলে থাকে। ফলে বাসা পুরো ফাঁকা থাকে। গাড়ি চালানোর সুবাদে আগে থেকেই এমন একটি বাসা টার্গেট করে বিল্লাল। পরে জুলহাসসহ এসে টার্গেট সেই বাসায় চুরি করে।

১১ বছর বয়সে শুরু, ছোট ভাই গুরু!
দুই ভাইয়ের মধ্যে জুলহাস বড়, বিল্লাল ছোট। বয়সে ছোট হলেও চুরিতে বড় বিল্লাল! মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই চুরি শুরু করে বিল্লাল। তখনও শুধু স্বর্ণ আর টাকা চুরি করত সে। পরে তার কাছ থেকেই চুরি শেখে জুলহাস। দুই ভাই মিলে চুরি করলে বিল্লাল সবসময়ই বাসা টার্গেট করে এবং পাহারায় থাকে। আর চুরি করে জুলহাস।

কেউ না দেখে মতো তৃতীয় তলায় উঠে, এরপর দরজার তালা ভাঙে, ঘরের ভেতর প্রতি আলমারির তালা ভাঙে, প্রতি ওয়ারড্রোবের লক খোলে, প্রতি ড্র‍য়ার খোলে, এরপর স্বর্ণের হদিছ পেয়ে ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করে। আর এসব কিছু করতে জুলহাসের সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট! ৩০ মিনিটেই প্রায় ২৪ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে সে!জামাই চুরি করে, শ্বশুর বিক্রি করে! জুলহাসের শ্বশুর মোঃ আলাউদ্দিন।

তিনি থাকেন চাঁদপুরের মতলবে। প্রতিবার চুরি করার পরপরই শ্বশুর বাড়ি চলে যায় জুলহাস। জামাইয়ের এই চুরির কথা শ্বশুরের অজানা নয়। কিন্তু তিনি এতে বাধা দেওয়া দূরের কথা, উল্টো সহযোগিতা করেন জামাইকে! জামাই জুলহাস স্বর্ণ চুরি করে তা শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। আর শ্বশুর সেই স্বর্ণ বিক্রি করেন! মিরপুর থেকে চুরি করা স্বর্ণও জুলহাস তার শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। শ্বশুর সেই স্বর্ণ চাঁদপুর উত্তর মতলবের ছেঙ্গারচর বাজারের একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে দেন! অভিযান চালানোর সময় জামাই জুলহাস গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যান শ্বশুর আলাউদ্দিন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান মিরপুর মডেল থানার সু-যোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহসীন ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শহীদ ওয়াসিমের জীবনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলন সফল হয়েছে

২৪ ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় দুই ভাইসহ মিরপুর থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার ৩

আপডেট সময় : ১১:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী জুড়ে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর কে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চুরি ও ছিনতাইকারী চক্র।এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর চুরি ছিনতাই রোদ করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানার আহাম্মেদনগরে জনৈকা সিরাজুম মুনীরার বাসার তালা ভেঙে আনুমানিক ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করা হয়। পরে সিসিটিভি দেখে জুলহাস বিল্লাল সহোদরকে শনাক্ত করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সাভার গেণ্ডা বাস স্টেশন থেকে বিল্লাল হোসেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের মতলব থেকে জুলহাসকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া চোরাই এসব স্বর্ণ রাখার অভিযোগে লিটন বর্মণ নামে এক স্বর্ণ দোকানদারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

গতকাল সাভার ও চাঁদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে এক জোড়া হাতের চুরি, এক জোড়া কানের দুল, একটি চেইন এবং গলিত রূপান্তরিত স্বর্ণসহ মোট ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ এবং বিভিন্ন ধরনের চাবি, রেঞ্জসহ চুরি করার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।১৫ বছর ধরে চুরি করে দুই ভাই!১৫ বছরে ২ শতাধিক চুরি করে দুই ভাই,৩০ মিনিটেই ২৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে তারা।গ্রেফতারকৃত দুই ভাই হলেন জুলহাস (৩১) ও বিল্লাল হোসেন (২৬) ।

ভোলার লালমোহন উপজেলার আবু কালামের ছেলে জুলহাস ও বিল্লাল। চুরি শুরু করে সেই ছোটবেলা থেকেই। দুইজনে চুরি শুরু করে ২০০৮ সাল থেকে। তখন থেকে আজ ১৫ বছর ধরেই চুরি করছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, এই ১৫ বছরে তারা দুই শতাধিক চুরি করে। চুরি করেই তারা অন্য জেলায় চলে যায়। ফলে অধিকাংশ ঘটনায় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এতগুলো চুরি করলেও তারা ধরা পরে মাত্র ১০ বারের মত। আর মামলা হয়েছে মাত্র ৩ টি! অন্যান্য সবাই সবকিছু চুরি করলেও জুলহাস বিল্লাল শুধু স্বর্ণ ও নগদ টাকা চুরি করে। কারণ এই দুইটি সহজেই বহনযোগ্য।

শুধু দিনের বেলা চুরি করে জুলহাস-বিল্লাল সাধারণত সব চোর রাতের বেলা চুরি করলেও ব্যতিক্রম এই দুই সহোদর। তারা চুরি করে দিনের বেলা। দিনের বেলা সাধারণত যে সময়টাতে বাচ্চারা স্কুলে থাকে সেই সময়টাকেই তারা চুরির জন্য বেছে নেয়। সেই সময় ঘরের পুরুষ সদস্যরা অফিসে থাকে। আর মহিলা সদস্যরা বাচ্চার স্কুলে থাকে। ফলে বাসা পুরো ফাঁকা থাকে। গাড়ি চালানোর সুবাদে আগে থেকেই এমন একটি বাসা টার্গেট করে বিল্লাল। পরে জুলহাসসহ এসে টার্গেট সেই বাসায় চুরি করে।

১১ বছর বয়সে শুরু, ছোট ভাই গুরু!
দুই ভাইয়ের মধ্যে জুলহাস বড়, বিল্লাল ছোট। বয়সে ছোট হলেও চুরিতে বড় বিল্লাল! মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই চুরি শুরু করে বিল্লাল। তখনও শুধু স্বর্ণ আর টাকা চুরি করত সে। পরে তার কাছ থেকেই চুরি শেখে জুলহাস। দুই ভাই মিলে চুরি করলে বিল্লাল সবসময়ই বাসা টার্গেট করে এবং পাহারায় থাকে। আর চুরি করে জুলহাস।

কেউ না দেখে মতো তৃতীয় তলায় উঠে, এরপর দরজার তালা ভাঙে, ঘরের ভেতর প্রতি আলমারির তালা ভাঙে, প্রতি ওয়ারড্রোবের লক খোলে, প্রতি ড্র‍য়ার খোলে, এরপর স্বর্ণের হদিছ পেয়ে ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি করে। আর এসব কিছু করতে জুলহাসের সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট! ৩০ মিনিটেই প্রায় ২৪ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে সে!জামাই চুরি করে, শ্বশুর বিক্রি করে! জুলহাসের শ্বশুর মোঃ আলাউদ্দিন।

তিনি থাকেন চাঁদপুরের মতলবে। প্রতিবার চুরি করার পরপরই শ্বশুর বাড়ি চলে যায় জুলহাস। জামাইয়ের এই চুরির কথা শ্বশুরের অজানা নয়। কিন্তু তিনি এতে বাধা দেওয়া দূরের কথা, উল্টো সহযোগিতা করেন জামাইকে! জামাই জুলহাস স্বর্ণ চুরি করে তা শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। আর শ্বশুর সেই স্বর্ণ বিক্রি করেন! মিরপুর থেকে চুরি করা স্বর্ণও জুলহাস তার শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। শ্বশুর সেই স্বর্ণ চাঁদপুর উত্তর মতলবের ছেঙ্গারচর বাজারের একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে দেন! অভিযান চালানোর সময় জামাই জুলহাস গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যান শ্বশুর আলাউদ্দিন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান মিরপুর মডেল থানার সু-যোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহসীন ।